করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিলো পাকিস্তানের প্রেক্ষাগৃহগুলো। তবে ধকল কাটিয়ে ১৯ নভেম্বর আবারও খুলে দেওয়া হচ্ছে বিনোদনপাড়া। আর ওইদিনই পাকিস্তানে মুক্তি পাচ্ছে স্পর্শকাতর সিনেমা ‌‘খেল খেল ম্যায়’।

১৯ নভেম্বরের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা পাকিস্তান। কেবল পাকিস্তান নয়, কৌতুহল তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। ‘খেল খেল ম্যায়’ নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে ভাড়তের রাজনীতিতেও।

‘খেল খেল ম্যায়’ এর প্রেক্ষাপট ১৯৭১ সাল। সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, এতে ‘ইতিবাচকভাবে’ তুলে ধরা হচ্ছে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধকে।

চলচ্চিত্রটির প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন পাকিস্তানের দুই জনপ্রিয় অভিনেতা সজল আলি ও বিলাল আব্বাস খান।

এর গল্প লিখেছেন ফিজা আলি, মীর্জা ও নাবিল কুরেশি। ফিজা ছবিটির প্রযোজক। আর পরিচালনায় আছেন নাবিল কুরেশি।

প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন পাকিস্তানের দুই জনপ্রিয় অভিনেতা সজল আলি ও বিলাল আব্বাস খান

গত ৩০ অক্টোবর প্রকাশ হয়েছে ছবির প্রথম টিজার। এর শুরুতে এক বৃদ্ধের কণ্ঠে অনুতাপ প্রকাশ পায়। তিনি বলেন, ‘আমরা বুঝতেই পারিনি একটা স্ফুলিঙ্গ একটা জঙ্গল শেষ করে দিতে পারে।’

আর শেষটায় সজল আলির কিছু প্রশ্ন তুলে ধরে হয়। তিনি তার বন্ধুদের বলেন, ‘কেন আমরা প্রশ্ন করি না? কেন একটি মিথ্যাকে আমাদের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে? কেউ কেন প্রশ্ন করে না, আসলেই সেই সময়ে কী হয়েছিল? নাকি আমরা সেই চালের মধ্যে ফেঁসে গেছি, যা শত্রুরা চাইতো?’

পাকিস্তানী সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, চলচ্চিত্রটিতে বর্তমান প্রজন্ম হিসেবে দেখানো হবে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে। যারা থিয়েটারের সাথে যুক্ত। তাদের একজন নায়িকা সজল আলি।

পাকিস্তান সম্পর্কে সত্যটা জানার আগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশে তার আসার ঘটনাও টিজারে দেখানো হয়। এছাড়া ছবির বেশকিছু দৃশ্য ধারণ হয়েছে ঢাকায়। যার বেশিরভাগই ড্রোন ব্যবহার করে শুট করা।

ট্রেইলর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সজল আলি ও বিলাল আব্বাস খান। ছবি: ডন

পাক গণমাধ্যম ডনকে নির্মাতা নাবিল কুরেশি জানান, “খেল খেল ম্যায়” এর মাধ্যমে তিনি মূলত সত্য খুঁজে বের করতে এবং সেটা প্রকাশ করতে চেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‌”১৯৭১ সালের যুদ্ধ সম্পর্কে আমরা যতটুকু শুনেছি তার সবটুকুই পশ্চিমা বা ভারতীয় প্রপাগান্ডা থেকে এসেছে। আমি কোনো প্রপাগান্ডা নয়, এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সত্যকে তুলে আনতে চেয়েছি।”

তিনি জানান, চলচ্চিত্রটিতে পাকিস্তানের দুই প্রজন্ম দেখানো হবে। এক প্রজন্ম তারা, যারা নির্বিচারে বাঙালিদের হত্যা করেছে। দ্বিতীয় প্রজন্ম তারা, যাদের কাছ থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের এ পাপের ইতিহাস সযত্নে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। যারা ইতিহাসের প্রকৃত সড়ক সম্পর্কে জানে না।

এরপর সিনেমার গল্প ঘুরবে এক অনুসন্ধানী তরুণীকে ঘিরে, যে ইতিহাসের আসল সত্যিটা জানতে চায়। এর জন্য চলে আসে ঢাকায়।

নাবিল কুরেশি জানান, সিনেমাটি কোনো বিতর্ক সৃষ্টির উদ্দেশে বানানো হয়নি। এটি মূলত পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দেবে। সেইসঙ্গে পাশাপাশি এগিয়ে যেতেও সহায়ক হবে।

এখন সময়/শামুমো